পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নারীকে উত্যক্তের ঘটনায় বখাটেদের হামলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।নিহতের নাম তোরাপ আলী (৭৫)। এ ঘটনায় দুই নারীসহ আহত হয়েছেন অন্তত আরো ১৪ জন। পুলিশ এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যার পর বখাটে মফেদুল ইসলামসহ চারজনকে আটক করেছে।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) হামলার ঘটনাটি ঘটে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের ডাসবেলাই গ্রামে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী বরাত দিয়ে জানায়, পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ডাসবেলাই গ্রামের গফুর আলীর পরিবারের এক নারীকে একই গ্রামের মৃত আছান আলীর ছেলে মফেদুল ইসলাম (৩৮) কয়েকদিন আগে কুপ্রস্তাব দেয়।
এই ঘটনার কারণে গফুর আলী বাদি হয়ে গ্রামের প্রধান আফজাল প্রামানিক ও বেল্লাল হাজীর নিকট ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে বিচারের আবেদন করেন।
এদিকে প্রধানগণ অভিযুক্ত মফেদুল ইসলামের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে উল্টো গফুর আলীর বাড়িতে বুধবার (১৪ অক্টোবর) সকালে তারা ভয়-ভীতি দেখাতে যান। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এদিকে পুর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী বখাটে মফেদুল ইসলাম ধারালো ছুড়ি ও লাটিসোটা নিয়ে গফুর আলীর বাড়ির পিছনে অপেক্ষা করছিল।
বেল্লাল হাজী ও আফজাল হুংকার দিয়ে তাদের ডাকা মাত্র ২০/২৫ জন ঝাঁপিয়ে পড়ে গফুর গংদের উপর।
হামলাকারীরা তোরাপ আলী ও ফজলুল হককে কুপিয়ে জখম করে এবং একই পরিবারের গফুর আলীসহ অপর ১৩ জনকে পিটিয়ে আহত করে। তারা ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই মাথায় জখমপ্রাপ্ত হয়েছেন বলে প্রাপ্ত সূত্রে জনা গেছে।
দুপুরে আশংকাজনক অবস্থায় তোরাপ আলী (৭৫) ও ফজলুল হক (৩৫) কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় (বুধবার) সন্ধ্যায় তোরাপ আলীর মৃত্যু হয়।
ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসাধীন গফুর আলী (৫৫) বলেন, খানমরিচ ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি বেল্লাল হাজীর নেতৃত্বে একদল লোক ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের বাড়ির উপর এসে অতর্কিত হামলা করে পরিবারের ১৫জনকে রক্তাক্ত জখম করেছে।
এর পর বখাটে মফিদুলসহ চার হামলাকারী নিজেদের শরীরে নিজেরাই আঁচড়ে-হেঁচরে ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।
এদিকে পুলিশ বখাটেদের তাৎক্ষণিক গ্রেপ্তার না করে কালক্ষেপণ করে। মামলা নিতেও বিলম্ব করে। সন্ধ্যায় তোরাপ আলী মারা যাবার পর পুলিশের টনক নড়ে। পরে রাতে হাসপাতাল থেকে আসামীদের গ্রেফতার করে।
ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তির মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বলেন, দুই নারীসহ আহত আরো ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বুধবার বিকালে থানায় একটি মামলা রুজু হয়েছে। রাত সাড়ে ৭টায় বখাটে মফিদুল ইসলাম (৩৫), শহিদুল ইসলাম (৩০), আনিছুর রহমান (৩৫) ও রুহুল আমিন (৫০)কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে সহকারী পুলিশ সুপার সজীব শাহরিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসামীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ।