
চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের প্রতি পাঁচজনের একজনই ডায়াবেটিক রোগী। আবার করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পর ৭৫ শতাংশ ডায়াবেটিক রোগীই দীর্ঘমেয়াদী নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে বেশিরভাগই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ব্যথা অনুভব করছেন। কারো চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে। এমন কি নিজের যত্ন নেয়ার ক্ষমতাও হারিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ ভালোভাবে ঘুমাতে পারছেন না এবং প্রতিনিয়ত দুঃস্বপ্ন দেখছেন। লোপ পাচ্ছে স্মৃতিশক্তি এবং দেখা দিয়েছে চুলপড়া সমস্যা। তবে সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এজন্য বাড়াতে হচ্ছে ইনসুলিনের মাত্রা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক), জেনারেল হাসপাতাল এবং বিআইটিআইডি’র যৌথ গবেষণায় এসব তথ্য ওঠে এসেছে। ‘ডায়াবেটিস এন্ড মেটাবলিক সিনড্রোম : ক্লিনিক্যাল রিসার্চ এন্ড রিভিউস’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধটি গতকাল প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’।
বাড়ছে ইনসুলিনের মাত্রা : সাধারণত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের পাশাপাশি ইনসুলিন নেয় রোগীরা। রক্তে গ্লুকোজ ও শর্করা নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিন নিতে হয়। যেসব ডায়াবেটিস রোগী করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন সুস্থ হওয়ার পর তাদের চল্লিশ শতাংশের ইনসুলিনের মাত্রা তিনগুণ করতে হয়েছে। এছাড়া বেশিরভাগকে দ্বিগুণ ইনসুলিন নিতে হচ্ছে।
তাছাড়া বিশ্বেও ডায়াবেটিসকে করোনাভাইরাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ডায়বেটিস ফেডারেশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে সংক্রমিতদের মাঝে ২০ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ, এবং চীনে দশ শতাংশ রোগী ডায়াবেটিস রোগী আছে।
গবেষকরা যা বলছেন : গবেষকদলের নেতৃত্বপ্রদানকারী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান বলেন, বাংলাদেশে দিন দিন ডায়াবেটিস রোগী আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। আগামী বছর নাগাদ এ সংখ্যা দুই কোটির কাছাকাছি বা বেশি হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের অন্য যে কোন সংক্রমণশীল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একইভাবে কোভিডের ক্ষেত্রেও ডায়াবেটিস রোগী ঝুঁকির মুখে। কাজেই বিষয়টি গবেষণার দাবি রাখে।